জিজ্ঞাসাঃ অনেক জায়গায় আযানের সময় মুয়াযযিন মাইকে তাসবীহ, দুআ, না’ত বা অন্তত দরূদ শরীফ পাঠ করেন। এরপর আযানের তাকবীর বলেন। সাধারণত মাগরিবের আযানে এমনটি শোনা যায়, কোথাও ফজরের আযানেও শোনা যায়। জানার বিষয় হলো, ইহা শরীয়ত সম্মত কিনা?
আবু বকর
ইমেইল থেকে।
সমাধানঃ শরীয়তে ইসলামীর নির্ভরযোগ্য কিতাবাদী অধ্যায়ন করে এই কথা প্রতীয়মান হয় যে, এটি একটি নবউদ্ভাবিত নিয়ম। খায়রুল কুরূনের তিন যুগের কোনো যুগে; বরং এরপরও কয়েক শত বছর পর্যন্ত এর কোনো অস্তিত্ব ছিল না।
মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবায় স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে যে, আযানের শুরু হল তাকবীর-আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার।
নবী-যুগ থেকে এ পদ্ধতিই চলে আসছে। হাদীস শরীফে আযানের জবাব দেওয়া, আযান শেষে দরূদ পড়া, এরপর দুআ পড়া-এই তিনটি আমলের কথা উল্লেখ আছে। এগুলো ব্যক্তিগত আমল। মুয়াযযিনও আযান শেষ করে দরূদ ও দুআ পড়বে। তবে একাকী ও নিম্নস্বরে। উচ্চস্বরেও নয়, মাইকেও নয়।
হাদীস ও মুতাওয়ারাছ সুন্নাহ অনুযায়ী আমল ত্যাগ করে এই নবউদ্ভাবিত পদ্ধতি গ্রহণ করা ভুল। এটা বিদআতের শামিল। আযান হল ইসলামের শিআর ও নিদর্শন। আর শিআর ও নিদর্শনের মাঝে পরিবর্তন-পরিবর্ধন অত্যন্ত গর্হিত বিষয়।
বেরেলভী ভাইদের কোনো কোনো এলাকায় দেখা যায়, তারা সব আযান দরূদ শরীফের মাধ্যমে শুরু করে। আর দরূদের শব্দ হল-আসসালাতু ওয়াস সালামু আলাইকা ইয়া রাসূলাল্লাহ। এই দরূদ রওযায়ে আতহার যিয়ারতের সময় অনুমোদিত হলেও সাধরণ অবস্থায় পড়ার জন্য নয়। একদিকে তারা নিজেদের পক্ষ থেকে আযানের সাথে দরূদ শরীফকে যুক্ত করেছে। অন্যদিকে এমন দরূদ যুক্ত করেছে, যা সব অবস্থায় পড়ার দরূদ নয়।
তথ্যসূত্রঃ
ফাতওয়া মাহমুদীয়া ৩/২৩৪; আহসানুল ফাতওয়া ১/৩৬৯
লেখক, মুহাদ্দিস, মাদরাসায়ে হালিমাতুস সাদিয়া রাযি. ঢাকা।
আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে রাসূলের মুহববতের সাথে সাথে রাসূলের সুন্নাহ অনুসরণের সৌভাগ্য দান করুন। প্রিয়তমের সুন্নাহ ও আদর্শের পরিবর্তে কোনো নবউদ্ভাবিত পন্থাই যদি পছন্দ হয় তাহলে তা কেমন মুহববত?!